জংলীপথে অনেকটা চড়াই পথ পেরিয়ে সদন তার বাহন থামাল। দশ-বারোটি বসতবাড়ি, লাগোয়া দোকান। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সাজিয়ে রেখে বিক্রিবাটায় ব্যস্ত বাড়ির মালিক ও মালকিনরা। মূলত পর্যটকদের ওপর নির্ভর করেই চলে এই ব্যবসা। প্রতিটি বাড়ির উঠোনে বা পাশের ফাঁকা জায়গায় ফুলের বাগান। রং-বেরঙের বাহারি ফুলের মেলা গাছে গাছে। বৈচিত্রে ভরা রঙের মেলায় সামিল লাল, সাদা, গোলাপি, হলুদ, বেগুনি ও আরো অনেকে। সবুজের মাঝে, মৃদু হাওয়ায় মাথা দুলিয়ে তারা জানান দিচ্ছিল নিজেদের স্বতন্ত্রতা।
মিনিট দশেক নামার পর আমরা যেখানে পৌছালাম সেটি এককথায় অসাধারণ। তার রূপ বর্ণনাতীত। পাহাড়ের গা ধুয়ে গড়িয়ে চলে গিয়েছে ছোট্ট নদী সান্তালি। তার গতিপথ রুদ্ধ করতে জটলা পাকিয়েছে ছোট বড়ো নুড়ি পাথর। কোথাও ঝমঝমিয়ে আবার কোথাও কলকলিয়ে সে এগিয়ে চলেছে অবিরল। তার সরু ধারার চারিপাশে পাহাড় ভেঙে গড়িয়ে আসা বড় বড় পাথরের চাঁই। সেগুলির ঠিক পিছন থেকেই শুরু হয়েছে ঘন জঙ্গল। লতায় পাতায় মোড়া সে জঙ্গল উঠে গিয়েছে পাহাড়ের ওপরে যতদূর চোখ যায়। ক্ষীণ স্বচ্ছ ধারা পাথরে ধাক্কা খেয়ে কুলকুল শব্দে বয়ে যাচ্ছিল পায়ের সামনে দিয়ে। ভীষণ ঠান্ডা সে জল। পা দিলে শিহরণ জাগে শরীরে।