একছুট্টে ডুয়ার্স

0
Price
From₹6,200
Price
From₹6,200
Full Name*
Email Address*
Your Enquiry*
* I agree with Terms of Service and Privacy Statement.
Please agree to all the terms and conditions before proceeding to the next step
Save To Wish List

Adding item to wishlist requires an account

5002

Why Book With Us?

  • No-hassle best price guarantee
  • Customer care available 24/7
  • Hand-picked Tours & Activities

Get a Question?

Do not hesitage to give us a call. We are an expert team and we are happy to talk to you.

9874522919

contact@abokash.com

ভ্রমণ পরিচিতি

হাজার কাজের ফাঁকে যখন হাঁপিয়ে ওঠে প্রাণ, খুঁজে পেতে চায় একটু নিরিবিলি। ধোঁয়া-ধুলো-কোলাহল থেকে শতক্রোশ দূরে, একঘেয়ে জীবনে একটু মুক্ত অক্সিজেন পেতে যখন ছটফট করে মন, আপনার অপেক্ষায় তখন গিরিরাজের পাদদেশে বিস্তীর্ণ বনভূমি, উঁচু-নিচু পাহাড়। বুকভরা সতেজ চায়ের সুবাস মাখা সকালে রিসর্টের বারান্দায় বসে ময়ূরের কেকা ও অচেনা পাখির দল উজ্জীবিত করবে আপনার অবকাশ। আর অলস দুপুরে গান শোনাবে কুলকুল করে বয়ে চলা একচিলতে নদী ও ঝিঁঝিঁর দল।

হবেন নাকি এদের অতিথি? অবকাশ নিয়ে এসেছে আপনাদের জন্যে পাহাড়ি জঙ্গলে বেড়ানোর এই বিশেষ সুযোগ। একছুট্টে দেখে নিন ভুটান ও উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার – ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্থান। দেরি কেন? ব্যাগ গোছাতে শুরু করুন আজই।

যাত্রাশুরু:

নিউ মাল জংশন (Map) / নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন (Map)

যাত্রা সমাপ্তি:

আলিপুর দুয়ার জংশন (Map)

যাত্রার সময়:

আপনার পছন্দমতো যে কোন সময়

প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত খরচ

  • হোটেল/হোমস্টে: তিন রাত্রের জন্য; দুই/তিন জনের থাকার ব্যবস্থাসমেত সমস্ত সুবিধাযুক্ত ঘর
  • আহারাদি: সকালের চা/কফি, সকালের জলখাবার, মধ্যাহ্নভোজ, বিকেলের জলখাবার এবং চা/কফি, ডিনার/রাত্রের খাবার (*প্রথম দিনের লাঞ্চ/মধ্যাহ্নভোজ থেকে অন্তিম দিনের ব্রেকফাস্ট অবধি)
  • সাইট-সিইং: বোলেরো বা ম্যাক্স জাতীয় ৭-৮ জনের বসার ব্যবস্থাযুক্ত গাড়ি

প্যাকেজ বহির্ভুত খরচ:

  • যাত্রা: যে কোন প্রকারের আসা ও যাওয়ার (বাস, ট্রেন অথবা বিমান) খরচ
  • জঙ্গল ভ্রমণের (Jungle Safari) যাবতীয় খরচ (Entry fees + Safari car charge + Car parking + Guide charge + Camera charge)
  • গাইড, কুলি, বেয়ারা বা ড্রাইভার টিপস/বকশিস ইত্যাদি
  • যেকোনো প্রকার হোটেল/রিসর্টের ‘বার’ চার্জ, টিপস ইত্যাদির খরচ
  • আমাদের ‘প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত খরচ’ (Price Includes) বিভাগে বর্ণিত পরিষেবা ছাড়া অন্য যেকোন অতিরিক্ত/অন্যান্য পরিষেবা

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • সাফারি পার্মিটের জন্য ২ কপি জেরক্স/ফটোকপি সহ সরকার অনুমোদিত সচিত্র পরিচয়পত্র (আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি)
  • গরম জামাকাপড় ও শীতের পোশাক (অক্টোবর-মার্চ)
  • ছাতা বা রেইন কোট
কি দেখবেন

ডুয়ার্স শব্দের অর্থ হল প্রবেশদ্বার। নেপালি শব্দ “দোর” বা “Door” থেকে ডুয়ার্স এর আগমন। বাংলায় যেটি দরজা বা প্রবেশপথ (gateway) হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ ভুটান সহ গোটা উত্তর-পূর্ব (North-East) ভারতের প্রবেশদ্বার পরিচিত ডুয়ার্স হিসেবে। হিমালয়ের পাদদেশে বিস্তীর্ণ বনভূমি, ছোট-বড়  পাহাড়, অজস্র নদী এবং অগণিত চা বাগান নিয়ে গঠিত ডুয়ার্স। প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু মানুষদের আদর্শ স্থান। প্রায় ১০০টিরও বেশি জনপ্রিয় স্পট গড়ে উঠেছে ডুয়ার্সকে কেন্দ্র করে। তাই কুয়াশা ভেজা নিবিড় বনানীর হাতছানি উপেক্ষা করা একপ্রকার অসম্ভব।

  • গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক ও জঙ্গল সাফারি (নিজ খরচ)
  • যাত্রাপ্রসাদ, চন্দ্রচূড়, চাপরামারি, মেদলা, চুকচুকি ইত্যাদি ওয়াচ-টাওয়ার পরিদর্শন (নিজ খরচ)
  • সানতালেখোলা
  • সামসিং
  • রকি আইল্যান্ড
  • প্যারেন
যাত্রাপথ

যাত্রাশুরু:শিয়ালদহ / কলকাতা – নিউ মাল জংশন

শিয়ালদহ বা কলকাতা স্টেশন থেকে রাত্রির ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু।

*উত্তরবঙ্গের ট্রেনগুলি ছাড়ার অল্প সময় আগেই স্টেশনে আসে। ভিড় সামলে নিজের সিট খুঁজতে সময় লেগে যায়। তাই ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের অন্ততপক্ষে ঘন্টাখানেক আগে স্টেশনে পৌছে যাবার চেষ্টা করুন। যে প্লাটফর্ম থেকে ট্রেন ছাড়বে সেটিকে এবং নিৰ্দিষ্ট কোচ চিহ্নিত করে তার সামনে ট্রেন আসা অবধি অপেক্ষা করুন।

** কেবল মাত্র একটি ট্রেনই কলকাতা (শিয়ালদহ) থেকে নিউ মাল জংশনের উদ্দেশে চলাচল করে – কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস। তবে নিউ জলপাইগুড়ি বা এন-জে-পি পৌঁছে, ভাড়ার গাড়ি নিয়ে লাটাগুড়ি আসা যায়। ভাড়া ১৫০০-১৮০০ টাকা।

প্রথম দিন:নিউ মাল জংশন – লাটাগুড়ি

নিউ মাল জংশনে আপনাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য উপস্থিত থাকবে আমাদের এজেন্ট অথবা গাইড-কাম-ড্রাইভার। সাক্ষাৎ শেষে গাড়িতে মালপত্র চাপিয়ে যাত্রা শুরু প্রথম দিনের গন্তব্যের উদ্দেশে। অদূরের মাল বাজারের ভিড় ছাড়িয়ে মসৃণ পথ ধরে প্রবেশ করবেন সবুজের অঙ্গনে। অচেনা দুটি নদী ও কিছু চা বাগান পেরিয়ে আসবে আরেক জনপদ চালসা। সেখান থেকে ডান দিকের ৩১-নং জাতীয় সড়ক ধরে ছুটে চলতে চলতে রাত্রের ক্লান্তি কেটে গিয়ে চনমনে হয়ে পড়বেন এক নিমিষেই। দুদিকের ঘন চাবাগানের পিছনে কালো জঙ্গলের আভা যেন হাতছানি দিয়ে ডাকবে আপনাকে।

আরও কিছুটা এগিয়ে গেলে, কালো পিচের মসৃণ রাস্তার দুপাশে ঠায় দাঁড়িয়ে সার সার কালো ডাল-পালা যুক্ত বিশাল বিশাল মহীরুহ। পরগাছাদের দল তাদের সংসার বিছিয়ে বসে গাছগুলির কান্ড-শাখা-প্রশাখায়। জানালা গলে শিরশিরে বাতাসের ঝাপটা খেতে খেতে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করবে ঘন জঙ্গলের মাঝে। নিমেষেই এসে পৌঁছাবেন আমাদের গন্তব্যে। লাটাগুড়ি।

ট্রেনের ক্লান্তির অবসান ঘটাতে বিশ্রাম নিন অল্প কিছুক্ষণ। দ্বিতীয় রাউন্ড সাফারির জন্যে উঠে পড়ুন দুপুর ২ টোর আগেই। চলে আসুন গরুমারা টিকিট কাউন্টারটির সামনে। চটজলদি জোগাড় করুন ছাড়পত্র।

জলপাই রঙের উর্দিধারী গাইড ও ড্রাইভার বেষ্টিত রাইনো জিপের সওয়ারি হয়ে পড়ন্ত আলোয় জঙ্গল ভ্রমণের মজাটাই আলাদা। নড়বড়ে রাস্তার ওপর দিয়ে গাড়ি যত এগোতে থাকবে গভীরে, শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস রোমাঞ্চিত করবে সমস্ত রোমকূপ। গাড়ির আওয়াজ ছাপিয়ে ঝিঁঝিঁর কোরাস সঙ্গী হয়ে ছুটে চলবে জঙ্গলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। চোখ তখন কালো ঝোপের ওপারে, এই বুঝি দলছুট কোনও দাঁতাল তাড়া করে সেখান থেকে, বা লাফ মারে কোনও লেপার্ড। ভাগ্য ভালো থাকলে দেখা মিলবে বাইসন, গন্ডার আর হাতির দলের। দস্যি বানর ছাড়াও সহচর হবে ময়ূর-ময়ূরী। নিস্তব্ধতাকে খান-খান করে মাঝে মধ্যেই চমকে দেবে তাদের কেকা।

দ্বিতীয় দিন:লাটাগুড়ি – মূর্তি

কুয়াশামাখা জঙ্গলের মোহ উপভোগ করতে সকালের সাফারি নিয়ে চলে আসুন মেদলা বা চুকচুকি ওয়াচটাওয়ার পরিদর্শন করতে। জঙ্গলের এই অংশে অরণ্যের পাশাপাশি চা-বাগানের দেখা মেলে। মেদলা নজর-মিনারটির একটি বৈশিষ্ট হল মোষের গাড়ি চড়ে সেখানে যেতে হয়। সাফারি জিপ মেদলার কাছে পৌঁছাতে পারে না, তাই এই অভিনব ব্যবস্থা।

সোনা রোদ গায়ে মেখে জঙ্গলের ঘুমভাঙা দেখে ফিরে আসতে হবে রিসর্টে। চটজলদি তৈরি হয়েই এবার বেরিয়ে পড়া গোটা দিনের জন্য। গাড়ি আবার ৩১নং জাতীয় সড়ক দিয়ে নিয়ে আসবে চালসা। দূরের পাহাড়ের রেখা স্পষ্ট হতে থাকবে দ্রুত। চালসা পেরিয়ে, মিনিট পাঁচেকের আঁকাবাঁকা পথ উঠেই লম্বা প্রশস্ত রাস্তা। আর দুই ধারের দৃশ্য অতি মনোরম।

সবুজের সমারোহে বিভোর হবে মন। থরে থরে চা-গাছের তরঙ্গায়িত ভূমি চলে গেছে যতদূর চোখ যায়। অবর্ণনীয় সুন্দর সেই দৃশ্য। গাড়ি থেকে নেমে ঢুঁ- মেরে আসুন পাশের বাগানে; ছুঁয়ে দেখুন চায়ের মায়া। সামসিং গার্ডেনে অল্প সময়ে বিরতির পর পা-বাড়াতে হবে এবার পরের গন্তব্যে। ছোট্ট লোকালয় পেরিয়ে আঁকাবাঁকা পথে উঠে আসতে হবে সানতালেখোলায়।

খোলা শব্দের অর্থ ছোট জলের স্রোত বা নদী। ছোট্ট নদী এই সান্তালে, নিরলস বয়ে চলেছে কুল-কুল শব্দ করে। নুড়ি-পাথরের ফাঁক গলে কখনও লাফিয়ে, কখনও লুকিয়ে। কাঠের পাটাতনবেষ্টিত ঝুলন্ত সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে একটু এগিয়ে গিয়ে ডানদিকে বেঁকে গেলেই যাত্রাপথ রুদ্ধ করে দাঁড়িয়ে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের মূল ফটক। এখানে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা অনবদ্য। ঝিঁঝিঁ ও পাখির কলতানে সাথে সান্তালের কুলকুল শব্দের কোরাস শুনতে শুনতে স্নিগ্ধ পরিবেশে জঙ্গলের শোভা দেখে কাটিয়ে দেওয়া যায় অনেকটা সময়।

কিছুটা বিরতির নিয়ে আবার পথ চলা শুরু। সামসিং ফরেস্ট রেস্ট হাউসকে বাঁয়ে রেখে মূর্তির গা বেয়ে অল্প চড়াই ভেঙে পৌঁছে যাব এবার রকি আইল্যান্ড। মূর্তির ধারা এখানে বেশ প্রবল। মৃদু গর্জন করে সে এগিয়ে চলেছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ছোট্ট একটি গ্রামের মাঝে গুটিকয়েক হোমস্টে ছড়িয়ে রয়েছে নদীটিকে ঘিরে। মূর্তিকে ছুঁতে নেমে আসতে হয় লোহার ব্রিজের নিচে। বড়-বড় টিলাগুলিকে ধাক্কা দিয়ে অনবরত বয়ে চলেছে স্বচ্ছ নীল ধারা।

সাময়িক বিরতির পর ফের চলা শুরু চড়াই পথে। মিনিট চল্লিশের আঁকা-বাঁকা পথে কুমাই চা-বাগান ও কুমাই ফরেস্টের ভেতর দিয়ে এসে নকশাল চেকপোস্ট পেরিয়ে যেখানে পোঁছবেন সেই স্পটটিও অনন্য সুন্দর। প্রকৃতি যেন দুহাত দিয়ে বুকে জড়িয়ে নেবে আপনাকে। ভুটান পাহাড়ের গা বেয়ে বয়ে আসা জলঢাকার হিমশীতল স্বচ্ছ-ধারা বয়ে চলেছে ছোট বড় টিলায় আঘাত খেতে খেতে। অচেনা পাখি আর নদীর গানে কখন যে অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে তা টেরও পাবেন না।

জলঢাকা ভিউপয়েন্ট দেখে মধ্যাহ্নভোজের পর্ব সেরে আবার পথ চলা শুরু। পথে পড়বে প্যারেন, ইচ্ছে হলে অল্প উঠে ঘুরে নিতে পারেন ছোট্ট এই পাহাড়ি গ্রাম। এলাচ আর কমলালেবুর সুবাস মাখা গ্রামের শান্ত মিশুকে মানুষগুলির আতিথেয়তা মুগ্ধ করবে আপনাকে।

বেশ কিছুটা চড়াই পেরিয়ে উঠে এলে পাবেন বেশ বড় একটি জনপদ। ভারতবর্ষের শেষ গ্রাম বিন্দু। জলঢাকা নদীর এই পারে গ্রামীণ ভারত, অন্য পারটির দখল ভুটানের হাতে। যদিও নেই কোনও কাঁটাতার, নেই কোনও বিভেদ। সুস্থ সম্পর্কের এই অসামান্য দৃষ্টান্ত চাক্ষুষ না করলে বিশ্বাসই করা যায় না।

অনতিদূরে পাঁচ গেটবিশিষ্ট জলঢাকা ব্যারেজ। গোলাপি রং করা কংক্রিটের থামের মাঝে বড় বড় পাল্লা দেওয়া লোহার গেট। ধূসর, কালো, সাদা, বাদামি, খয়েরি রঙের ছোট-বড় নুড়ি পাথর বিছানো পথের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে শ্বেতশুভ্র জলরাশি। বরফের মতো ভীষণ ঠান্ডা সেই জলে পা দিতেই ঝট্কা লাগলো শরীরে। তবুও সে অনুভূতি বর্ণনাতীত। পাশের বাদামী টিলাটির ওপর বসে উপভোগ করতে পারেন পড়ন্ত সূর্যের শেষ উষ্ণতা। ধূসর কুয়াশায় মোড়া ভুটান পাহাড়ের রূপ ভুলিয়ে দেবে সারা দিনের ক্লান্তি।

পাহাড়ে সন্ধে নামে ঝুপ করে, তাই এবার ফেরার পালা উল্টো পথে। কুমানি ছাড়িয়ে চাপরামারি ফরেস্টের সরু রাস্তা যখন ধরবে গাড়ি; দুরুদুরু বুকে তখন সকালের রোমাঞ্চ। এই বুঝি, হাতির পাল মড়মড়িয়ে গাছ ভাঙতে-ভাঙতে পাশের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পথ আটকে দাঁড়ায়! অথবা বাইসন তাড়া করে তাদের তীক্ষ্ন শিং উঁচিয়ে!

তৃতীয় দিন:মূর্তি – জলদাপাড়া

ভোরের কুয়াশামোড়া জঙ্গলের ঘুম ভাঙার দৃশ্য অসামান্য। মূর্তির সকাল তাই খুব স্পেশাল। ইচ্ছে হলে আগের দিনের মত আজও সাফারি নিয়ে  ঘুরে আসতে পারেন চাপরামারি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি থেকে। মূর্তি ব্রিজ পেরিয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন জঙ্গলের বুক চিরে কালো পিচের রাস্তায় সাফারি জিপে বসে উপভোগ করুন জঙ্গলের গান। মিনিট কুড়ির মধ্যেই পৌঁছে যাবেন চাপরামারি গেটে। অনুমতিপত্র দেখিয়ে বন-পথ মাড়িয়ে যখন চাপরামারি ওয়াচ-টাওয়ার পোঁছাবেন, সূয্যি মামার মিঠে রোদ ভিজিয়ে দেবে জঙ্গল। আপনাকে স্বাগত জানাবে ছোট্ট লেকের পানকৌড়ি ও দূরের সল্ট প্লান্টের পাশের পক্ষীরাজ। ওয়াচ টাওয়ারের ওপর থেকে দেখা মিলতে পারে জঙ্গলের আড়ালে থাকা গন্ডার, বাইসনের বা হাতির দলের। সর্বক্ষণের সঙ্গী এখানে ঝিঁঝিঁ, হর্নবিল আর ময়ূরের কেকা।

সাফারি থেকে ফিরেই রেডি হয়ে নিন চটজলদি। সফর শুরু করার আগে, সাদা বালি মেখে পা ডোবান মূর্তির স্বচ্ছ জলে। পড়ে থাকা নুড়ির ওপর বসে নীল আকাশের নিচে দূরের পাহাড়ের অবয়ব মোহিত করবেই আপনাকে। ব্রিজ পার হয়ে খানিক হেঁটে আসতে পারেন জঙ্গলে মোড়া রাস্তা দিয়ে। তবে সাবধান, খুব বেশিদূরে চলে যাবেন না যেন! হাতির পাল বা বাইসনের তাড়া খাওয়ার আগেই ফিরে আসুন লোকালয়ে।

মূর্তিকে বিদায় জানিয়ে চলতে হবে এবার জলদাপাড়ার উদ্দেশে। তেন্দু ফরেস্ট পেরিয়ে জলঢাকা নদী টপকে গাড়ি ছুটে চলবে অসংখ্য চাবাগানের মধ্যে দিয়ে। প্রায় আধ ঘন্টাখানেক চলার পর প্রথম বিরতি ডায়না নদীর তীরে। গাড়ি থেকে নেমে ঘুরে নিন নদীর পার বরাবর কিছুটা। দূরের পাহাড়ে কোলে নদীর রূপ হার মানাবে সত্যিকারের লেডি “ডায়না” কেও।

আবারও পথ চলতে হবে অগণিত চা-বাগান আর ছোট ছোট জনপদকে পিছনে ফেলে। প্রায় ঘন্টাখানেক চলার পর জাতীয় সড়ক ছেড়ে ডানদিকে ঘুরে প্রবেশ করতে হবে খয়েরবাড়ি জঙ্গলে। মিনিট বিশেকের জংলী পথে এগিয়ে গেলে আসবে সাউথ খয়েরবাড়ি টাইগার রেসকিউ সেন্টার। ডুয়ার্সের জঙ্গলে বা লোকালয়ে থাবা বসানো লেপার্ডদের উদ্ধার করে আনা হয় এখানে। ছোট-বাঘের ডেরায় ঘন্টাখানেকের বিরতি নেবার পর রওনা দিতে হবে ডুয়ার্সের আরেক জাতীয় উদ্যান জলদাপাড়ার উদ্দেশে।

বিকেলের অবকাশে জিপ সাফারিটি সেরে নিতে পারেন। এই জঙ্গলের চরিত্র একটু আলাদা। আদিম মহীরুহের পাশাপাশি বুক সমান ঘাসের জঙ্গলে ঢাকা ন্যাশনাল পার্কটির অনেকাংশ। দেড় ঘন্টার সাফারিতে দেখে নিন হলং বাংলো, জলদাপাড়া ওয়াচটাওয়ার এবং হরিণডাঙা ওয়াচটাওয়ার। হাতি, বাইসন, একশৃঙ্গ গন্ডারের পাশাপাশি এই জঙ্গলে দেখা মেলে বনের রাজা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। এছাড়া হরিণ আর ময়ূর মিলবে অহরহ।

চতুর্থ দিন:জলদাপাড়া – আলিপুরদুয়ার

জলদাপাড়া এসে হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গল ভ্রমণ বা এলিফ্যান্ট সাফারি না করলে ডুয়ার্স ঘোরা সম্পূর্ণ হয় না। কেবল মাত্র সকালের তিনটি স্লটে এক ঘন্টার এই সাফারি নেওয়া যায়। রিসর্টের সাথে যোগাযোগ করে আগে থেকেই বুক করে রাখুন, নতুবা অধিক চাপে নাও পেতে পারেন সেই সুযোগ। রিসর্ট বা হোটেল থেকে জঙ্গলের ভেতর ৭ কিমি দূরের হলং বাংলোর রাইডিং পয়েন্ট থেকেই নেওয়া যায় এই সাফারি। আনুমানিক সমস্ত খরচ মিলিয়ে জনপ্রতি ৮০০-১০০০ টাকা করে পড়ে এই সাফারিটিতে।

সাফারি থেকে ফিরে তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়ুন। হাসিমারা হয়ে চিলাপাতা ফরেস্ট পার করে পৌঁছে সোজা কোচবিহার রাজবাড়ী। রাজবাড়ী সংলগ্ন রয়েল পার্ক, সাগরদিঘি, ও মদনমোহন মন্দির দেখে পাড়ি দিতে হবে নিউ আলিপুরদুয়ার জংশন।

অন্যান্য

*অতিরিক্ত সময় থাকলে:বক্সা ও জয়ন্তী ভ্রমণ

** হাতে অতিরিক্ত একটি দিন থাকলে ঘুরে নিতে পারেন জয়ন্তী। এই অতিরিক্ত দিনের জন্য খরচ পড়বে মাথা পিছু ১৫০০ টাকা।

বক্সা টাইগার রিজার্ভের জয়ন্তী বিট একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট। প্রজাপতি আর হর্ন-বিল মোড়া ঘন জঙ্গল পেরিয়ে পৌঁছে যেতে হয় জয়ন্তীর কাছে। নদীর সাদা বালি পায়ে মেখে ঘুরে আসতে পারেন ব্রিটিশদের তৈরী ডুবন্ত সেতুর পাশ থেকে। আরও সাহসী হলে ছোট্ট ট্রেক করে ঘুরে নিন ছোট মহাকাল মন্দির বা তার ওপরের বড় মহাকাল মন্দিরে।

বিকেলের পড়ন্ত রোদ গায়ে মেখে জঙ্গলের ফাঁক গলে আরও একটি ট্রেক বাড়িয়ে তুলবে রোমাঞ্চের মাত্রা। পায়ে হেঁটে অদূরের জঙ্গলে অবস্থিত পোখরি লেক দেখে আসুন বেলা থাকতেই। তবে গাইড নিতে হবে অবশ্যই, কারণ পথ ভুলে গভীর জঙ্গলে যেতে চাইবেন না নিশ্চয়ই?

বিশেষ ছাড়
  • **৮ জনের গ্রুপের জন্য বিশেষ ৫% এবং ১০ জনের গ্রুপের জন্য ১০% অতিরিক্ত ছাড় (একই গাড়িতে)।
  • *যে কোন সময় নিজেদের উদ্যোগে যেতে চাইলে আপনাদের স্বাগত। আমাদের সমস্ত ব্যবস্থাপনা আপনাদের জন্য তৈরী থাকবে। আপনাদের সুবিধেমতো দিনেই ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হবে। সেক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭-৮ জনের গ্রুপ প্রয়োজন হবে, অন্যথায় জনপ্রতি খরচের তারতম্য ঘটতে পারে।
অন্যান্য প্যাকেজ ট্যুর
Special Offer

South Africa – Cape Town

From₹2,750₹2,200
(1 Review)
15 travellers are considering this tour right now!

Proceed Booking